দেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগে হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় কাঁপছে সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট জেলার মানুষ। গত ১৫দিনের শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সকাল ৯টা থেকে ঘন কুয়াশা কেটে গেলেও সন্ধ্যার পড়ে ঘন কুয়াশায় ছেয়ে যায় রাস্তা-ঘাট। তীব্র শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবি সাধারণ মানুষ। অপরদিকে লালমনিরহাটে ঠান্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শীতজনিত নানা রোগব্যাধি।
গত ১৫ দিনে ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়াম, হাঁপানি, অ্যাজমা, হৃদরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা।
এ শীতে লালমনিরহাটে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে তিস্তা, ধরলা ও রত্নাইসহ ১৩টি নদ-নদী তীরবর্তী ৬৩টি চরের প্রায় কয়েক হাজার মানুষসহ নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা। সেই সাথে গবাদীপশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের প্রকোপ থেকে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ, কোদালখাতা, ভাটিবাড়ী ও কাকেয়া টেপা এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষরা কাজকর্ম না পেয়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
এদিকে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা, ধরলা ও রত্নাই নদীর তীরবর্তী এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ কাজকর্ম না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।
শীতে তিস্তা, ধরলা ও রত্নাই নদীর পাড়ের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেই সাথে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনসহ লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থানকারী ছিন্নমূল মানুষগুলো শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পোহাচ্ছে। শীতার্ত মানুষগুলো এক টুকরো গরম কাপড়ের জন্য তাকিয়ে আছেন সমাজের বিত্তবানদের দিকে।
প্রসঙ্গত, এখন শীতার্ত মানুষের পাশে সরকারি ও বেসরকারী ভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ নির্মলেন্দু রায় বলেন, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে কয়েকদিন ধরে হাসপাতালগুলোতে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা সেবা দিচ্ছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে শীতার্ত মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত ২৪হাজার পিচ কম্বল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি আরও ২হাজার পিচ কম্বল এসেছে বলেও তিনি জানান।